XtGem Forum catalog
HomeBlogAbout me
দ্বিতীয় অধ্যায়
ফুল, ফল ও সবজি চাষ
ষড় ঋতুর দেশ আমাদের এ বাংলাদেশ। বছর ঘুরে আসে ছয়টি ঋতু - গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন-, শীত ও বসন-। প্রতিটি ঋতুতে নানা রং এর নানা গন্ধের ফুলে ফলে ভরে ওঠে দেশের মাঠ-ঘাট, প্রান-র ও বাড়ির আঙিনা। গ্রীষ্মকালে দিনেরাতে বেশ গরম পড়ে। এ সময়ে সর্যমুখী, বেলী, অপরাজিতা এবং নানা ধরনের লিলি ফুল ফোটে।
বর্ষাকালে আকাশে মেঘের ঘনঘটা আর অঝোর বর্ষণে দোলনচাঁপা, টগর, কামিনী, গন্ধরাজ, কলাবতী, দোপাটি ইত্যাদি ফুল ফোটে। কাশফুল শরৎকালের বৈশিষ্ট্য। এছাড়া শিউলি, বকুল ও হাসনাহেনাও শরৎকালে ফোটে।
শীতের সময় সম্ভবত আমরা সবচেয়ে বেশি বৈচিত্র্যময় ফুল দেখতে পাই। ক্যালেন্ডুলা, গাঁদা, জিনিয়া, কসমস, ডালিয়া, চন্দ্রমলি−কা ইত্যাদি ফুল শীতকালে ফোটে।
কাঞ্চন, পলাশ ও কৃষ্ণচড়া ইত্যাদি বসনে-র ফুল। ছয় ঋতুর ফুলগুলোকে আমরা গ্রীষ্মকালীন, বর্ষাকালীন এবং শীতকালীন এ তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারি।
বিভিনড়ব ঋতুতে বিভিনড়ব ফুল ফুটলেও গোলাপ, জবা, রজনীগন্ধা ইত্যাদি ফুল সারা বছর ধরেই ফোটে। ফুলগাছ লাগাতে হলে প্রমে মাটি তৈরি করতে হবে। মাটির সঙ্গে বিভিনড়ব জৈব সার যেমন গোবরপচা সার, আবর্জনাপচা সার, হাড়ের গুঁড়া, খৈল, ছাই, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা ইত্যাদি মিশাতে হয়। দোআঁশ মাটিতে ফুলগাছ ভাল জনেম। বাগানে কিংবা টবে ফুল গাছের চারা অথবা কলম লাগানো যায়। খুব সহজ উপায়ে গাছের কলম তৈরি করা যায়। পাতাবাহার, রঙ্গন, টগর গাছের পাতাসহ ডাল কেটে বোতলের পানিতে গোড়ার দিক ডুবিয়ে রাখ। বোতলের পানি যেন শুকিয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ রাখবে। কিছুদিন পর দেখবে ডালের গোড়া থেকে শিকড় বের হয়েছে।
আমাদের দেশে ষড় ঋতুতে যেমনি নানা ফুল ফোটে তেমনি নানা রকম ফলও জন্মে। যে অনুযায়ী ফলকে আমরা তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারি :
১। গ্রীষ্মকালীন ফল : আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, বাতাবি লেবু, বেল, তাল ইত্যাদি।
২। বর্ষাকালীন ফল : পেয়ারা, আমড়া, জামরুল ইত্যাদি।
৩। শীতকালীন ফল : কমলালেবু, বরই, জলপাই ইত্যাদি।
এছাড়া কলা, পেঁপে, নারকেল, ইত্যাদি ফল কমবেশি সারা বছরই পাওয়া যায়।
ফুল গাছের মতো ফলের গাছও মাটিতে এবং টবে লাগান যায়। দোআঁশ মাটি ফলগাছের জন্য ভাল। মাটির সাথে সার মিশিয়ে মাটি তৈরি করে গাছ লাগাতে হয়। বর্ষার শুরুতে গাছ লাগালে বৃষ্টির পানিতে গাছ তাড়াতাড়ি বড় হয়। লক্ষ রাখবে গাছের গোড়ায় যেন পানি জমে না থাকে। মাঝে মাঝে আগাছা পরিষ্কার করতে হয়। শুকনো মৌসুমে গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি দিতে হয়। তোমাদের বাড়ির আশেপাশে অথবা বিদ্যালয়ের খালি জায়গায় উপযুক্ত স'ানে ফুল ও ফলের গাছ লাগাবে। গাছ লাগাবার জন্য প্রমে জমিতে দেড় হাত চওড়া ও দেড় হাত গভীর গর্ত করতে হবে। গর্তের উপরের মাটি একপাশে এবং ভেতরের মাটি আর একপাশে রেখে কিছুদিন ফেলে রাখতে হবে। পরে মাটির সাথে গোবর সার ও অন্যান্য জৈব সার মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে। গর্ত ভরাট করার সময় উপরের মাটি নিচে এবং নিচের মাটি উপরে দিতে হবে। ফুল ও ফল গাছের চারায় অনেক সময় খুঁটি দিতে হয়। এতে গাছের কাণ্ড জোর পায়। তৈরী জমি চারা লাগানো আমাদের দেশে অনেক রকম শাকসবজিও জন্মে। চাষ করার সময় অনুযায়ী আমাদের দেশের শাকসবজিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় :
এপ্রিল থেকে সেপেটম্বর পর্যন- যেসব শাকসবজি চাষ করা হয় সেগুলো গ্রীষ্মকালীন। পটল, ঢেঁড়স, চাল- কুমড়া, শসা, ঝিঙা, কাকরোল, করলা, ডাঁটা ইত্যাদি গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি।
অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন যে সকল শাকসবজির চাষ হয় সেগুলো শীতকালীন। টমেটো, লাউ, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, গাজর, মটরশুঁটি, পালংশাক ইত্যাদি শীতকালীন শাকসবজি।
কাঁচাকলা, পেঁপে, বেগুন, পুঁইশাক, লালশাক ইত্যাদি শাকসবজি সারা বছর কমবেশি পাওয়া যায়। তোমাদের বাড়ি অথবা স্কুলের আশেপাশে যদি খালি জমি থাকে সেসব জায়গায় শাকসবজি বা ফুলের চাষ করতে পার। যদি একেবারেই জায়গা না থাকে তাহলে টবে শাকসবজি লাগাতে পার।
দোআঁশ মাটি শাকসবজি চাষের জন্য ভাল। মাটির সাথে প্রচুর পরিমাণে জৈব সার মিশিয়ে মাটি তৈরি করতে হয়। তৈরী মাটিতে ঋতু অনুযায়ী ফুল, ফল ও শাকসবজির গাছ লাগালে গাছ ভালভাবে বৃদ্ধি পায় এবং ফলন ভাল হয়। কুমড়া, শসা, করলা, লাউ ইত্যাদি যেসব গাছের কাণ্ড দুর্বল, তাদের বৃদ্ধি ও ভাল ফলনের জন্য মাচা করে দিতে হয়।

অনুশীলনী
ক. বহুনির্বাচনি প্রশড়ব
সঠিক উত্তরটিতে টিক (√) চিহ্ন দাও
১। কাশফুল কোন ঋতুতে ফোটে?
ক) গ্রীষ্ম খ) বর্ষা গ) শরৎ ঘ) শীত
২। সারাবছর কমবেশি পাওয়া যায় কোনটি?
ক) পেঁপে খ) ডাঁটা গ) কাকরোল ঘ) করলা
৩। শীতকালীন ফল কোনটি?
ক) কমলালেবু খ) তাল গ) পেয়ারা ঘ) কলা
৪। ফলগাছ কখন লাগালে ভালভাবে বৃদ্ধি পায়?
ক) গ্রীষ্মকালে খ) শরৎকালে গ) শীতকালের শেষে ঘ) বর্ষাকালের শুরুতে
খ. সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশড়ব
১। ফুলগাছ লাগাবার জন্য মাটি কীভাবে তৈরি করা হয়, তা বর্ণনা কর।
২। খুব সহজে কীভাবে কলম করা যায় লেখ।
৩। শীতকালীন শাকসবজির একটি তালিকা তৈরি কর।
গ. রচনামলক প্রশড়ব
১। বাংলাদেশে কোন ঋতুতে কোন ফুল ফোটে তার বর্ণনা দাও।
২। ঋতুভেদে বাংলাদেশের পাঁচটি করে ফলের তালিকা তৈরি কর।
৩। ফলগাছ লাগাবার জন্য তুমি কী ব্যবস'া গ্রহণ করবে বর্ণনা কর।
৪। কীভাবে ফুল ও ফল গাছের যত নেবে?

Abu Hasan
Rajshahi University
216.73.216.38